সহজেই পড়া মুখস্ত করার ৯ টি বৈজ্ঞানিক উপায়

ছোটবেলায় আমরা কত গল্প, কত কবিতা এমনকি কোরআনের কত সূরা মুখস্ত করেছি খুব অনায়াসেই এবং সাবলীল ভাবে। কিন্তু কেন যেন আমাদের সেই স্মৃতিশক্তি টা দিন দিন কমে যেতে শুরু করেছে কেননা এখন আমরা আর আগের মত করে কোন কিছুই মুখস্ত করতে পারিনা। -  আচ্ছা কথাটা কি আদৌ সত্য?


পড়া মুখস্ত রাখার উপায় কি
Photo (collected): পড়া মুখস্ত রাখার উপায়

সত্য বলতে ছোটবেলায় আমরা যখন কিছু পরতাম সেখানে আমাদের অনেক মনোযোগ থাকত এবং আমরা যখন কারো কাছ থেকে কিছু শুনতাম সেটাও অনেক মন দিয়ে শুনতাম যার ফলে খুব সহজেই সেটা আমাদের মুখস্থ হয়ে যেত।

তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের মাথায় নানা ধরনের চিন্তাভাবনা এসে ভর করতে শুরু করেছে। সত্য বলতে এই চিন্তাগুলোকে বাদ দিয়ে যদি মন দিয়ে আমরা  পরতে পারি তাহলে আমরা আবার সেই আগের মত করে পড়া গুলোকে মুখস্ত করতে পারব।


 আপনাদের সুবিধার্থে পড়া মুখস্ত রাখার কিছু বিজ্ঞানসম্মত উপায় নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করলামঃ



পড়া শুরুর আগে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নেওয়া:

সত্যি বলতে এটা অনেক কার্যকরী একটা উপায়। কারণ হাটাহাটি করলে আমাদের মস্তিষ্ক যেমন সতেজ হয় তেমনি নতুন উদ্যম ফিরে পায়। তাই শরীর চর্চাবিদদের পাশাপাশি বিজ্ঞানীরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন যে পড়া শুরুর আগে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নিলে পড়াই যেমন মন বসে তেমনি অনেক দ্রুত ও খুব সহজেই তা মুখস্ত হয়  । 



উচ্চস্বরে পড়া : 

কমবেশি আমরা সকলেই হয়তো জানি নীরবে পড়ার থেকে উচ্চস্বরে পড়লে সেটা অনেক বেশি কার্যকরী হয়। বিষয়টা এমন নয় যে পাশের বাড়ির লোককে শুনিয়ে শুনিয়ে আপনাকে পড়তে হবে। অন্তত এতোটুকু শব্দ করে পড়ুন যেন আপনি যেটা পড়ছেন সেটা আপনার কান অব্দি পৌঁছায় । এতে করে মস্তিষ্ক খুব সহজে আপনার পড়াটাকে ধরতে পারবে এবং খুব সহজেই আপনি সেটাকে মুখস্ত করতে পারবেন। 


চুইংগাম চাবানো :

আপনি যখন করবেন তখন যদি আপনি আপনার মুখে একই সাথে অন্য একটা কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন তাহলে পড়া অনেক দ্রুত মুখস্থ হয়। এক্ষেত্রে আপনি চুইংগাম বা যেকোনো কিছুর চিবুতে পারেন 



বেশি করে পড়া ও লেখা: 

পড়ার পাশাপাশি লেখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেটা পড়বেন সেটা সাথে সাথে লিখে ফেলার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনি যে জিনিসটা মুখস্ত করেছেন সেটা অনেকক্ষণ আপনার স্মৃতিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে। এছাড়াও একবার পড়ে সেটা লিখে নিলে বা  দেখে দেখে লিখলেও সেটা মুখস্থ করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 


দাগিয়ে দাগিয়ে পড়া:

হয়তো বিষয়টি আপনিও লক্ষ্য করবেন যে আপনার অনেক বন্ধুই পড়ার সময় বইকে বিভিন্ন কালারের কলম দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। আমরা হয়তো অনেক সময় থাকে অহংকারী বলে থাকি। কিন্তু সত্য বলতে এটা অনেক কার্যকরী একটা উপায় যা আপনাকে পড়া মুখস্ত করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও পরীক্ষার আগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো রিভিশন করার ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি আপনাকে অনেক সহায়তা করবে । 


কিছুক্ষণ পরপর বিরতি দেয়া ঃ

এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে আমাদের মন কখনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে একটানা 45 থেকে 50 মিনিটের বেশিক্ষণ মন দিতে পারে না।  তাই আপনি যদি মনে করেন একটানা ঘন্টার পর ঘন্টা পড়তে থাকবেন এটা কখনোই সম্ভব নয়। তাই প্রতি 30 মিনিট বা 45 মিনিট পর পর অন্ততঃ কিছুক্ষন বিশ্রাম নিন। এই বিশ্রামের পরিমাণটা হতে পারে দুই মিনিট কিংবা পাঁচ মিনিট। তবে অবশ্যই কিছুক্ষন বিশ্রাম নিন। আপনি চাইলে এ সময়টুকু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন কিংবা বিছানায় নিরবে শুয়ে থাকতে পারেন অথবা পাশের ঘরে গিয়ে আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে একটু কিছুক্ষণ কথা বলে আসতে পারেন । 



বুঝে বুঝে পড়া :

আমরা অনেকেই শুধু তোতাপাখির মতো পড়া গুলোকে মুখস্ত করে যাই। তবে অবশ্যই আপনাকে প্রতিটা জিনিস বুঝে বুঝে পড়তে হবে। না বুঝে মুখস্থ করতে গেলে হয়তো কিছুক্ষণের জন্য আপনি সেটা মুখস্থ রাখতে পারবেন, তবে খুব বেশিদিন সেটা মস্তিষ্কে ধরে রাখতে পারবেন না। 

নিমীনিক করে পড়া :

 এ বিষয়টি সত্যিই অনেক কার্যকরী। পড়াগুলো কে ফ্লোচার্ট, টেবিল, ছন্দ ইত্যাদি আকারে গুছিয়ে গুছিয়ে পড়ুন। তাহলে পড়াগুলো কে যেমন খুব দ্রুত মুখস্থ করতে পারবেন তেমনি অনেক দিন সেটা মনে রাখতে পারবেন। 

অন‍্যকে বুঝানো: 

আপনি যা বললেন সেটা যদি আপনি অন্যকে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাহলে সেটা আপনি দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারবেন। বিষয়টা এমন নয় যে অন্যকে বোঝানোর জন্য আপনাকে শিক্ষক হতে হবে। আপনি চাইলে আপনার পড়াগুলো কে আপনার বন্ধু বা সহপাঠীকে বোঝাতে পারেন, কিংবা আপনি চাইলে অবসর সময়ে নিরবের চুপচাপ আপনার সামনে কাউকে কল্পনা করে সেই অদৃশ্য মানুষটিকে পড়াগুলো কে বোঝানোর চেষ্টা করবেন। 




এই বৈজ্ঞানিক উপায় গুলো অনুসরণ করে যদি আপনি পড়েন তাহলে খুব সহজেই আপনি আপনার পড়া গুলোকে মুখস্থ রাখতে পারবেন। 

আশা করি আজকের এই ব্লগ পোস্ট থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। আপনি চাইলে আপনার মতামত গুলোকে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানিয়ে দিতে পারেন।  


আর আমাদের ব্লগ পোষ্ট গুলোর আপডেট পেতে চাইলে অবশ্যই আপনার ইমেইল দিয়ে আমাদের কে ফলো করে রাখবেন 


-ধন‍্যবাদ

No comments

Powered by Blogger.